وَرَسُوۡلاً اِلٰى بَنِىۡۤ اِسۡرٰٓءِيۡلَ ۙ اَنِّىۡ قَدۡ جِئۡتُكُمۡ بِاٰيَةٍ مِّنۡ رَّبِّكُمۡۙ اَنِّىۡۤ اَخۡلُقُ لَكُمۡ مِّنَ الطِّيۡنِ كَهَيۡـَٔةِ الطَّيۡرِ فَاَنۡفُخُ فِيۡهِ فَيَكُوۡنُ طَيۡرًۢا بِاِذۡنِ اللّٰهِۚ وَاُبۡرِئُ الۡاَكۡمَهَ وَالۡاَبۡرَصَ وَاُحۡىِ الۡمَوۡتٰى بِاِذۡنِ اللّٰهِؕ وَاُنَبِّئُكُمۡ بِمَا تَاۡكُلُوۡنَ وَمَا تَدَّخِرُوۡنَۙ فِىۡ بُيُوۡتِكُمۡؕ اِنَّ فِىۡ ذٰلِكَ لَاٰيَةً لَّكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ
৪৯.) এবং নিজের রসূল বানিয়ে ইসরাঈলদের কাছে পাঠাবেন।”
(আর বনী ইসরাঈলদের কাছে রসূল হিসেবে এসে সে বললোঃ) “আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে নিশানী নিয়ে এসেছি। আমি তোমাদের সামনে মাটি থেকে পাখির আকৃতি বিশিষ্ট একটি মূর্তি তৈরী করছি এবং তাতে ফুৎকার দিচ্ছি, আল্লাহর হুকুমে সেটি পাখি হয়ে যাবে। আল্লাহর হুকুমে আমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে নিরাময় করি এবং মৃতকে জীবিত করি। আমি তোমাদের জানিয়ে দিচ্ছি, তোমরা নিজেদের গৃহে কি খাও ও কি মজুদ করো। এর মধ্যে তোমাদের জন্য যথেষ্ট নিশানী রয়েছে, যদি তোমরা ঈমানদার হও।
وَمُصَدِّقًا لِّمَا بَيۡنَ يَدَىَّ مِنَ التَّوۡرٰٮةِ وَلِاُحِلَّ لَكُمۡ بَعۡضَ الَّذِىۡ حُرِّمَ عَلَيۡكُمۡؕوَجِئۡتُكُمۡ بِاٰيَةٍ مِّنۡ رَّبِّكُمۡ فَاتَّقُوۡا اللّٰهَ وَاَطِيۡعُوۡنِ
৫০.) আমি সেই শিক্ষা ও হিদায়াতের সত্যতা ঘোষণা করার জন্য এসেছি, যা বর্তমানে আমার যুগে তাওরাতে আছে। আর তোমাদের জন্য যেসব জিনিস হারাম ছিল তার কতকগুলো হালাল করার জন্য আমি এসেছি। দেখো, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে আমি নিশানী নিয়ে এসেছি। কাজেই আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।
اِنَّ اللّٰهَ رَبِّىۡ وَرَبُّكُمۡ فَاعۡبُدُوۡهُؕ هٰذَا صِرَاطٌ مُّسۡتَقِيۡمٌ
৫১.) আল্লাহ্ আমার রব এবং তোমাদেরও রব। কাজেই তোমরা তাঁর বন্দেগী করো। এটিই সোজাপথ।”
فَلَمَّاۤ اَحَسَّ عِيۡسٰى مِنۡهُمُ الۡكُفۡرَ قَالَ مَنۡ اَنۡصَارِىۡۤ اِلَى اللّٰهِؕ قَالَ الۡحَوَارِيُّوۡنَ نَحۡنُ اَنۡصَارُ اللّٰهِۚ اٰمَنَّا بِاللّٰهِۚ وَاشۡهَدۡ بِاَنَّا مُسۡلِمُوۡنَ
৫২.) যখন ঈসা অনুভব করলো, ইসরাঈল কুফরী ও অস্বীকার করতে উদ্যোগী হয়েছে, সে বললোঃ “কে হবে আল্লাহর পথে আমার সাহায্যকারী? হাওয়ারীগণ বললোঃ আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। সাক্ষী থাকো, আমরা মুসলিম (আল্লাহ্র সামনে আনুগত্যের শির নতকারী)।
رَبَّنَاۤ اٰمَنَّا بِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ وَاتَّبَعۡنَا الرَّسُوۡلَ فَاكۡتُبۡنَا مَعَ الشّٰهِدِيۡنَ
৫৩.) হে আমাদের মালিক! তুমি যে ফরমান নাযিল করেছ, আমরা তা মেনে নিয়েছি এবং রসূলের আনুগত্য কবুল করে নিয়েছি। সাক্ষ্যদানকারীদের মধ্যে আমাদের নাম লিখে নিয়ো।”
وَمَكَرُوۡا وَمَكَرَ اللّٰهُؕ وَاللّٰهُ خَيۡرُ الۡمٰكِرِيۡنَ
৫৪.) তারপর বনী ইসরাঈল (ঈসার বিরুদ্ধে) গোপন চক্রান্ত করতে লাগলো। জবাবে আল্লাহও তাঁর গোপন কৌশল খাটালেন। আর আল্লাহ শ্রেষ্ঠতম কুশলী।
اِذۡ قَالَ اللّٰهُ يٰعِيۡسٰىۤ اِنِّىۡ مُتَوَفِّيۡكَ وَرَافِعُكَ اِلَىَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا وَجَاعِلُ الَّذِيۡنَ اتَّبَعُوۡكَ فَوۡقَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡۤا اِلٰى يَوۡمِ الۡقِيٰمَةِۚ ثُمَّ اِلَىَّ مَرۡجِعُكُمۡ فَاَحۡكُمُ بَيۡنَكُمۡ فِيۡمَا كُنۡتُمۡ فِيۡهِ تَخۡتَلِفُوۡنَ
৫৫.) (এটি আল্লাহরই একটি গোপন কৌশল ছিল) যখন তিনি বললেনঃ “হে ঈসা! এখন আমি তোমাকে ফিরিয়ে নেবো এবং তোমাকে আমার নিজের দিকে উঠিয়ে নেবো। আর যারা তোমাকে অস্বীকার করেছে তাদের থেকে (অর্থাৎ তাদের সঙ্গ এবং তাদের পূতিগন্ধময় পরিবেশে তাদের সঙ্গে থাকা থেকে) তোমাকে পবিত্র করে দেবো এবং তোমাকে যারা অস্বীকার করেছে তাদের ওপর তোমার অনুসারীদের কিয়ামত পর্যন্ত প্রাধান্য দান করবো। তারপর তোমাদের সবাইকে অবশেষে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে। সে সময় আমি তোমাদের মধ্যে যেসব বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোর মীমাংসা করে দেবো।
فَاَمَّا الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا فَاُعَذِّبُهُمۡ عَذَابًا شَدِيۡدًا فِىۡ الدُّنۡيَا وَالۡاٰخِرَةِ وَمَا لَهُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِيۡنَ
৫৬.) যারা কুফরী ও অস্বীকার করার নীতি অবলম্বন করেছে তাদেরকে দুনিয়ায় ও আখেরাতে উভয় স্থানে কঠোর শাস্তি দেবো এবং তারা কোন সাহায্যকারী পাবে না।
وَاَمَّا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوۡا الصّٰلِحٰتِ فَيُوَفِّيۡهِمۡ اُجُوۡرَهُمۡؕ وَاللّٰهُ لَا يُحِبُّ الظّٰلِمِيۡنَ
৫৭.) আর যারা ঈমান ও সৎকাজ করার নীতি অবলম্বন করেছে, তাদেরকে তাদের পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে। ভালো করেই জেনে রাখো আল্লাহ জালেমদের কখনোই ভালোবাসেন না।”
ذٰلِكَ نَتۡلُوۡهُ عَلَيۡكَ مِنَ الۡاٰيٰتِ وَالذِّكۡرِ الۡحَكِيۡمِ
৫৮.) এই আয়াত ও জ্ঞানগর্ভ আলোচনা আমি তোমাকে শুনাচ্ছি।
اِنَّ مَثَلَ عِيۡسٰى عِنۡدَ اللّٰهِ كَمَثَلِ اٰدَمَؕ خَلَقَهٗ مِنۡ تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَهٗ كُنۡ فَيَكُوۡنُ
৫৯.) আল্লাহ্র কাছে ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের মতো। কেননা আল্লাহ তাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেন এবং হুকুম দেন, হয়ে যাও, আর তা হয়ে যায়।
اَلۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّكَ فَلَا تَكُنۡ مِّنَ الۡمُمۡتَرِيۡنَ
৬০.) এ প্রকৃত সত্য তোমার রবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। কাজেই তুমি সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
فَمَنۡ حَآجَّكَ فِيۡهِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الۡعِلۡمِ فَقُلۡ تَعَالَوۡا نَدۡعُ اَبۡنَآءَنَا وَاَبۡنَآءَكُمۡ وَنِسَآءَنَا وَنِسَآءَكُمۡ وَاَنۡفُسَنَا وَاَنۡفُسَكُمۡ ثُمَّ نَبۡتَهِلۡ فَنَجۡعَل لَّعۡنَتَ اللّٰهِ عَلَى الۡكٰذِبِيۡنَ
৬১.) এই জ্ঞান এসে যাওয়ার পর এখন যে কেউ এ ব্যাপারে তোমার সাথে ঝগড়া করে, হে মুহাম্মাদ! তাকে বলে দাওঃ “এসো আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রগণকে এবং তোমাদের পুত্রগণকে। আর আমাদের নারীদেরকে এবং তোমাদের নারীদেরকে আর আমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের নিজেদেরকে; তারপর আল্লাহর কাছে এই মর্মে দোয়া করি যে, যে মিথ্যাবাদী হবে তার ওপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক।”
اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الۡقَصَصُ الۡحَقُّۚ وَمَا مِنۡ اِلٰهٍ اِلَّا اللّٰهُؕ وَاِنَّ اللّٰهَ لَهُوَ الۡعَزِيۡزُ الۡحَكِيۡمُ
৬২.) নিঃসন্দেহে এটা নির্ভুল সত্য বৃত্তান্ত। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আর আল্লাহর সত্ত্বা প্রবল পরাক্রান্ত এবং তার জ্ঞান ও কর্মকৌশল সমগ্র বিশ্ব ব্যবস্থায় সক্রিয়।
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّ اللّٰهَ عَلِيۡمٌۢ بِالۡمُفۡسِدِيۡنَ
৬৩.) কাজেই এরা যদি (এই শর্তে মোকাবিলায় আসার ব্যাপারে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে (তারা যে ফাসাদকারী একথা পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং) আল্লাহ অবশ্যই ফাসাদকারীদের অবস্থা ভালো করেই জানেন।
قُلۡ يٰۤاَهۡلَ الۡكِتٰبِ تَعَالَوۡا اِلٰى كَلِمَةٍ سَوَآءٍۭ بَيۡنَنَا وَبَيۡنَكُمۡ اَلَّا نَعۡبُدَ اِلَّا اللّٰهَ وَلَا نُشۡرِكَ بِهٖ شَيۡـًٔا وَّلَا يَتَّخِذَ بَعۡضُنَا بَعۡضًا اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِؕ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقُوۡلُوۡا اشۡهَدُوۡا بِاَنَّا مُسۡلِمُوۡنَ
৬৪.) বলঃ হে আহলি কিতাব! এসো এমন একটি কথার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই ধরনের। তা হচ্ছেঃ আমরা আল্লাহ ছাড়া কারোর বন্দেগী ও দাসত্ব করবো না। তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবো না। আর আমাদের কেউ আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেও নিজের রব হিসেবে গ্রহণ করবে না। যদি তারা এ দাওয়াত গ্রহণ করতে প্রস্তুত না হয়, তাহলে পরিষ্কার বলে দাওঃ “তোমরা সাক্ষী থাকো, আমরা অবশ্যই মুসলিম (একমাত্র আল্লাহর বন্দেগী ও আনুগত্যকারী)।”
يٰۤاَهۡلَ الۡكِتٰبِ لِمَ تُحَآجُّوۡنَ فِىۡۤ اِبۡرٰهِيۡمَ وَمَاۤ اُنۡزِلَتِ التَّوۡرٰٮةُ وَالۡاِنۡجِيۡلُ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِهٖۤؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ
৬৫.) হে আহলি কিতাব! তোমরা ইব্রাহীমের ব্যাপারে আমার সাথে ঝগড়া করছো কেন? তাওরাত ও ইঞ্জিল তো ইব্রাহীমের পরে নাযিল হয়েছে। তাহলে তোমরা কি এতটুকু কথাও বুঝো না?
هٰۤاَنۡتُمۡ هٰٓؤُلَآءِ حٰجَجۡتُمۡ فِيۡمَا لَكُمۡ بِهٖ عِلۡمٌ فَلِمَ تُحَآجُّوۡنَ فِيۡمَا لَيۡسَ لَكُمۡ بِهٖ عِلۡمٌؕ وَاللّٰهُ يَعۡلَمُ وَاَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ
৬৬.) -তোমরা যেসব বিষয়ের জ্ঞান রাখো সেগুলোর ব্যাপারে বেশ বিতর্ক করলে, এখন আবার সেগুলোর ব্যাপারে বিতর্ক করতে চললে কেন যেগুলোর কোন জ্ঞান তোমাদের নেই?-আল্লাহ্ জানেন কিন্তু তোমরা জানো না।
مَا كَانَ اِبۡرٰهِيۡمُ يَهُوۡدِيًّا وَّلَا نَصۡرَانِيًّا وَّلٰكِنۡ كَانَ حَنِيۡفًا مُّسۡلِمًا وَّمَا كَانَ مِنَ الۡمُشۡرِكِيۡنَ
৬৭.) ইব্রাহীম ইহুদী ছিল না, খৃস্টানও ছিল না বরং সে তো ছিল একজন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং সে কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ইব্রাহীমের যারা অনুসরণ করেছে তারাই তাঁর সাথে ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক রাখার অধিকারী।
اِنَّ اَوۡلَى النَّاسِ بِاِبۡرٰهِيۡمَ لَلَّذِيۡنَ اتَّبَعُوۡهُ وَهٰذَا النَّبِىُّ وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡاؕ وَاللّٰهُ وَلِىُّ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ
৬৮.) আর এখন এই নবী এবং এর ওপর যারা ঈমান এনেছে তারাই এই সম্পর্ক রাখার বেশী অধিকারী। আল্লাহ কেবল তাদেরই সমর্থক ও সাহায্যকারী যারা ঈমান এনেছে।
وَدَّتۡ طَّآٮِٕفَةٌ مِّنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ لَوۡ يُضِلُّوۡنَكُمؕۡ وَمَا يُضِلُّوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡفُسَهُمۡ وَمَا يَشۡعُرُوۡنَ
৬৯.) (হে ঈমানদারগণ!) আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে একটি দল যে কোন রকমে তোমাদের সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত করতে চায়। অথচ তারা নিজেদের ছাড়া আর কাউকেই বিপথগামী করছে না। কিন্তু তারা এটা উপলব্ধি করে না।
يٰۤاَهۡلَ الۡكِتٰبِ لِمَ تَكۡفُرُوۡنَ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ وَاَنۡتُمۡ تَشۡهَدُوۡنَ
৭০.) হে আহলি কিতাব! কেন আল্লাহর আয়াত অস্বীকার করছো, অথচ তোমরা নিজেরাই তা প্রত্যক্ষ করছো?
يٰۤاَهۡلَ الۡكِتٰبِ لِمَ تَلۡبِسُوۡنَ الۡحَقَّ بِالۡبَاطِلِ وَتَكۡتُمُوۡنَ الۡحَقَّ وَاَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
৭১.) হে আহলি কিতাব! কেন সত্যের গায়ে মিথ্যার প্রলেপ লাগিয়ে তাকে সন্দেহযুক্ত করে তুলছো? কেন জেনে বুঝে সত্যকে গোপন করছো?
وَقَالَتۡ طَّآٮِٕفَةٌ مِّنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ اٰمِنُوۡا بِالَّذِىۡۤ اُنۡزِلَ عَلَى الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَجۡهَ النَّهَارِ وَاكۡفُرُوۡۤا اٰخِرَهٗ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُوۡنَۚۖ
৭২.) আহলি কিতাবদের একটি দল বলে, এই নবীকে যারা মেনে নিয়েছে তাদের ওপর যা কিছু নাযিল হয়েছে, তার প্রতি তোমরা সকাল বেলায় ঈমান আনো এবং সাঁঝের বেলায় তা অস্বীকার করো। সম্ভবত এই উপায়ে এই লোকেরা নিজেদের ঈমান থেকে ফিরে যাবে।
وَلَا تُؤۡمِنُوۡۤا اِلَّا لِمَنۡ تَبِعَ دِيۡنَكُمۡؕ قُلۡ اِنَّ الۡهُدٰى هُدَى اللّٰهِۙ اَنۡ يُّؤۡتٰٓى اَحَدٌ مِّثۡلَ مَاۤ اُوۡتِيۡتُمۡ اَوۡ يُحَآجُّوۡكُمۡ عِنۡدَ رَبِّكُمۡؕ قُلۡ اِنَّ الۡفَضۡلَ بِيَدِ اللّٰهِ يُؤۡتِيۡهِ مَنۡ يَّشَآءُؕ وَاللّٰهُ وٰسِعٌ عَلِيۡمٌ
৭৩.) তাছাড়া এই লোকেরা পরস্পর বলাবলি করে, নিজের ধর্মের লোক ছাড়া আর কারো কথা মেনে নিয়ো না। হে নবী! এদের বলে দাও, “আল্লাহ্র হিদায়াতই তো আসল হিদায়াত এবং এটা তো তাঁরই নীতি যে, এক সময় যা তোমাদের দেয়া হয়েছিল, তাই অন্য একজনকে দেয়া হবে অথবা অন্যেরা তোমাদের রবের কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে পেশ করার জন্য শক্তিশালী প্রমাণ পেয়ে যাবে।” হে নবী! তাদের বলে দাও, “অনুগ্রহ ও মর্যাদা আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। তিনি ব্যাপক দৃষ্টির অধিকারী
يَخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهٖ مَنۡ يَّشَآءُؕ وَاللّٰهُ ذُوۡ الۡفَضۡلِ الۡعَظِيۡمِ
৭৪.) এবং সবকিছু জানেন। নিজের রহমতের জন্য তিনি যাকে চান নির্ধারিত করে নেন এবং তাঁর অনুগ্রহ বিশাল ব্যাপ্তির অধিকারী।”
وَمِنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ مَنۡ اِنۡ تَاۡمَنۡهُ بِقِنۡطَارٍ يُّؤَدِّهٖۤ اِلَيۡكَۚ وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ اِنۡ تَاۡمَنۡهُ بِدِيۡنَارٍ لَّا يُؤَدِّهٖۤ اِلَيۡكَ اِلَّا مَا دُمۡتَ عَلَيۡهِ قَآٮِٕمًاؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمۡ قَالُوۡا لَيۡسَ عَلَيۡنَا فِىۡ الۡاُمِّيّٖنَ سَبِيۡلٌ وَّيَقُوۡلُوۡنَ عَلَى اللّٰهِ الۡكَذِبَ وَهُمۡ يَعۡلَمُوۡنَ
৭৫.) আহলি কিতাবদের মধ্যে কেউ এমন আছে, তার ওপর আস্থাস্থাপন করে যদি তাকে সম্পদের স্তূপ দান করো, তাহলেও সে তোমার সম্পদ তোমাকে ফিরিয়ে দেবে। আবার তাদের কারো অবস্থা এমন যে, যদি তুমি তার ওপর একটি মাত্র দীনারের ব্যাপারেও আস্থাস্থাপন করো, তাহলে সে তা তোমাকে ফিরিয়ে দেবে না, তবে যদি তোমরা তার ওপর চড়াও হয়ে যাও। তাদের এই নৈতিক অবস্থার কারণ হচ্ছে এই যে, তারা বলেঃ “নিরক্ষরদের (অ–ইহুদী) ব্যাপারে আমাদের কোন দায়দায়িত্ব নেই।” আর এটা একটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট কথা তারা আল্লাহর প্রতি আরোপ করছে। অথচ তারা জানে, (আল্লাহ্ এমন কোন কথা বলেননি। )
بَلىٰ مَنۡ اَوۡفٰى بِعَهۡدِهٖ وَاتَّقٰى فَاِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الۡمُتَّقِيۡنَ
৭৬.) আচ্ছা, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না কেন? যে ব্যক্তিই তার অঙ্গীকার পূর্ণ করবে এবং অসৎকাজ থেকে দূরে থাকবে, সে আল্লাহর প্রিয়ভাজন হবে। কারণ আল্লাহ মুত্তাকীদের ভালোবাসেন।
اِنَّ الَّذِيۡنَ يَشۡتَرُوۡنَ بِعَهۡدِ اللّٰهِ وَاَيۡمَانِهِمۡ ثَمَنًا قَلِيۡلاً اُولٰٓٮِٕكَ لَا خَلَاقَ لَهُمۡ فِىۡ الۡاٰخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللّٰهُ وَلَا يَنۡظُرُ اِلَيۡهِمۡ يَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ وَلَا يُزَكِّيۡهِمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ اَلِيۡمٌ
৭৭.) আর যারা আল্লাহর সাথে করা অঙ্গীকার ও নিজেদের শপথ সামান্য দামে বিকিয়ে দেয়, তাদের জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পাক–পবিত্রও করবেন না। বরং তাদের জন্য রয়েছে কঠোর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَاِنَّ مِنۡهُمۡ لَفَرِيۡقًا يَّلۡوٗنَ اَلۡسِنَتَهُمۡ بِالۡكِتٰبِ لِتَحۡسَبُوۡهُ مِنَ الۡكِتٰبِۚ وَمَا هُوَ مِنَ الۡكِتٰبِ وَيَقُوۡلُوۡنَ هُوَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰهِ وَمَا هُوَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰهِۚ وَيَقُوۡلُوۡنَ عَلَى اللّٰهِ الۡكَذِبَ وَهُمۡ يَعۡلَمُوۡنَ
৭৮.) তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে, তারা কিতাব পড়ার সময় এমনভাবে জিভ ওলট পালট করে যে, তোমরা মনে করতে থাকো, তারা কিতাবেরই ইবারত পড়ছে, অথচ তা কিতাবের ইবারত নয়। তারা বলে, যা কিছু আমরা পড়ছি, তা আল্লাহর কাছ থেকেই পাওয়া অথচ তা আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া নয়, তারা জেনে বুঝে আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করে।
مَا كَانَ لِبَشَرٍ اَنۡ يُّؤۡتِيَهُ اللّٰهُ الۡكِتٰبَ وَالۡحُكۡمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُوۡلَ لِلنَّاسِ كُوۡنُوۡا عِبَادًا لِّىۡ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَلٰكِنۡ كُوۡنُوۡا رَبّٰنِيّٖنَ بِمَا كُنۡتُمۡ تُعَلِّمُوۡنَ الۡكِتٰبَ وَبِمَا كُنۡتُمۡ تَدۡرُسُوۡنَۙ
৭৯.) কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ কিতাব, হিকমত ও নবুওয়াত দান করবেন আর সে লোকদের বলে বেড়াবে, তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে আমার দাস হয়ে যাও, এটা তার জন্য শোভনীয় নয়। সে তো একথাই বলবে, তোমরা খাঁটি রব্বানী হয়ে যাও, যেমন এই কিতাবের দাবী, যা তোমরা পড়ো এবং অন্যদের পড়াও।
وَلَا يَاۡمُرَكُمۡ اَنۡ تَتَّخِذُوۡا الۡمَلٰٓٮِٕكَةَ وَالنَّبِيّٖنَ اَرۡبَابًاؕ اَيَاۡمُرُكُمۡ بِالۡكُفۡرِ بَعۡدَ اِذۡ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ
৮০.) তারা তোমাদের কখনো বলবে না, ফেরেশতা বা নবীদেরকে তোমাদের রব হিসেবে গ্রহণ করো। তোমরা যখন মুসলিম তখন তোমাদেরকে কুফরীর হুকুম দেয়া একজন নবীর পক্ষে কি সম্ভব?
وَاِذۡ اَخَذَ اللّٰهُ مِيۡثَاقَ النَّبِيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيۡتُكُمۡ مِّنۡ كِتٰبٍ وَّحِكۡمَةٍ ثُمَّ جَآءَكُمۡ رَسُوۡلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَكُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنۡصُرُنَّهٗؕ قَالَ ءَاَقۡرَرۡتُمۡ وَاَخَذۡتُمۡ عَلٰى ذٰلِكُمۡ اِصۡرِىۡؕ قَالُوۡۤا اَقۡرَرۡنَاؕ قَالَ فَاشۡهَدُوۡا وَاَنَا مَعَكُمۡ مِّنَ الشّٰهِدِيۡنَ
৮১.) স্মরণ করো, যখন আল্লাহ নবীদের থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, “আজ আমি তোমাদের কিতাব ও হিকমত দান করেছি, কাল যদি অন্য একজন রসূল এই শিক্ষার সত্যতা ঘোষণা করে তোমাদের কাছে আসে, যা আগে থেকেই তোমাদের কাছে আছে, তাহলে তোমাদের তার প্রতি ঈমান আনতে হবে এবং তাকে সাহায্য করতে হবে।” এই বক্তব্য উপস্থাপন করার পর আল্লাহ জিজ্ঞেস করেনঃ “তোমরা কি এ কথার স্বীকৃতি দিচ্ছো এবং আমার পক্ষ থেকে অঙ্গীকারের গুরুদায়িত্ব বহন করতে প্রস্তুত আছো?” তারা বললো, হ্যাঁ, আমরা স্বীকার করলাম।
فَمَنۡ تَوَلّٰى بَعۡدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ
৮২.) আল্লাহ্ বললেনঃ “আচ্ছা, তাহলে তোমরা সাক্ষী থাকো এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী থাকলাম, এরপর যারাই এ অঙ্গীকার ভঙ্গ করবে তারাই হবে ফাসেক।”
اَفَغَيۡرَ دِيۡنِ اللّٰهِ يَبۡغُوۡنَ وَلَهٗۤ اَسۡلَمَ مَنۡ فِىۡ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ طَوۡعًا وَّكَرۡهًا وَّاِلَيۡهِ يُرۡجَعُوۡنَ
৮৩.) এখন কি এরা আল্লাহর আনুগত্যের পথ (আল্লাহ্র দ্বীন) ত্যাগ করে অন্য কোন পথের সন্ধান করছে? অথচ আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছুই স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আল্লাহর হুকুমের অনুগত (মুসলিম) এবং তাঁরই দিকে সবাইকে ফিরে যেতে হবে।
قُلۡ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَاۤ اُنۡزِلَ عَلَيۡنَا وَمَاۤ اُنۡزِلَ عَلٰٓى اِبۡرٰهِيۡمَ وَاِسۡمٰعِيۡلَ وَاِسۡحٰقَ وَيَعۡقُوۡبَ وَالۡاَسۡبَاطِ وَمَاۤ اُوۡتِىَ مُوۡسَىٰ وَعِيۡسٰى وَالنَّبِيُّوۡنَ مِنۡ رَّبِّهِمۡ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ اَحَدٍ مِّنۡهُمۡ وَنَحۡنُ لَهٗ مُسۡلِمُوۡنَ
৮৪.) হে নবী! বলোঃ “আমরা আল্লাহকে মানি, আমাদের ওপর অবতীর্ণ শিক্ষাকে মানি, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও ইয়াকূব সন্তানদের ওপর অবতীর্ণ শিক্ষাকেও মানি এবং মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীদেরকে তাদের রবের পক্ষ থেকে যে হিদায়াত দান করা হয় তার উপরও ঈমান রাখি। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না এবং আল্লাহর হুকুমের অনুগত (মুসলিম)।”
وَمَنۡ يَّبۡتَغِ غَيۡرَ الۡاِسۡلٰمِ دِيۡنًا فَلَنۡ يُّقۡبَلَ مِنۡهُۚ وَهُوَ فِىۡ الۡاٰخِرَةِ مِنَ الۡخٰسِرِيۡنَ
৮৫.) এ আনুগত্য (ইসলাম) ছাড়া যে ব্যক্তি অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে চায় তার সে পদ্ধতি কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ব্যর্থ, আশাহত ও বঞ্চিত।
كَيۡفَ يَهۡدِىۡ اللّٰهُ قَوۡمًا كَفَرُوۡا بَعۡدَ اِيۡمَانِهِمۡ وَشَهِدُوۡۤا اَنَّ الرَّسُوۡلَ حَقٌّ وَّجَآءَهُمُ الۡبَيِّنٰتُؕ وَاللّٰهُ لَا يَهۡدِىۡ الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِيۡنَ
৮৬.) ঈমানের নিয়ামত একবার লাভ করার পর পুনরায় যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে, তাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত দান করবেন, এটা কেমন করে সম্ভব হতে পারে? অথচ তারা নিজেরা সাক্ষ্য দিয়েছে যে, রসূল সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তার কাছে উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহও এসেছে। আল্লাহ্ জালেমদের হিদায়াত দান করেন না।
اُولٰٓٮِٕكَ جَزَآؤُهُمۡ اَنَّ عَلَيۡهِمۡ لَعۡنَةَ اللّٰهِ وَالۡمَلٰٓٮِٕكَةِ وَالنَّاسِ اَجۡمَعِيۡنَ
৮৭.) তাদের ওপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের লানত, এটিই হচ্ছে তাদের জুলুমের সঠিক প্রতিদান।
خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَاۚ لَا يُخَفَّفُ عَنۡهُمُ الۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ يُنۡظَرُوۡنَ
৮৮.) এই অবস্থায় তারা চিরদিন থাকবে। তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না এবং তাদের বিরামও দেয়া হবে না।
اِلَّا الَّذِيۡنَ تَابُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِكَ وَاَصۡلَحُوۡا فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ
৮৯.) তবে যারা তাওবা করে নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন করে নেয় তারা এর হাত থেকে রেহাই পাবে। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
اِنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا بَعۡدَ اِيۡمَانِهِمۡ ثُمَّ ازۡدَادُوۡا كُفۡرًا لَّنۡ تُقۡبَلَ تَوۡبَتُهُمۡۚ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الضَّآلُّوۡنَ
৯০.) কিন্তু যারা ঈমান আনার পর আবার কুফরী অবলম্বন করে তারপর নিজেদের কুফরীর মধ্যে এগিয়ে যেতে থাকে, তাদের তাওবা কবুল হবে না। এ ধরনের লোকেরা তো চরম পথভ্রষ্ট।
اِنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا وَمَاتُوۡا وَهُمۡ كُفَّارٌ فَلَنۡ يُّقۡبَلَ مِنۡ اَحَدِهِمۡ مِّلۡءُ الۡاَرۡضِ ذَهَبًا وَّلَوِ افۡتَدٰى بِهٖۤ ؕاُولٰٓٮِٕكَ لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِيۡمٌۙ وَّمَا لَهُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِيۡنَ
৯১.) নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, যারা কুফরী অবলম্বন করেছে এবং কুফরীর অবস্থায় জীবন দিয়েছে, তাদের মধ্য থেকে কেউ যদি নিজেকে শাস্তি থেকে বাঁচাবার জন্য সারা পৃথিবীটাকে স্বর্ণে পরিপূর্ণ করে বিনিময় স্বরূপ পেশ করে তাহলেও তা গ্রহণ করা হবে না। এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এবং তারা নিজেদের জন্য কোন সাহায্যকারীও পাবে না।
لَنۡ تَنَالُوۡا الۡبِرَّ حَتّٰى تُنۡفِقُوۡا مِمَّا تُحِبُّوۡنَ ؕ وَمَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ شَىۡءٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِيۡمٌ
৯২.) তোমরা নেকী অর্জন করতে পারো না যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় বস্তুগুলো (আল্লাহ্র পথে) ব্যয় করো। আর তোমরা যা ব্যয় করবে আল্লাহ তা থেকে বেখবর থাকবেন না।
كُلُّ الطَّعَامِ كَانَ حِلاًّ لِّبَنِىۡۤ اِسۡرآءِيۡلَ اِلَّا مَا حَرَّمَ اِسۡرٰٓءِيۡلُ عَلٰى نَفۡسِهٖ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تُنَزَّلَ التَّوۡرٰٮةُؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِالتَّوۡرٰٮةِ فَاتۡلُوۡهَاۤ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ
৯৩.) এসব খাদ্যবস্তু (শরীয়াতে মুহাম্মাদীতে যেগুলো হালাল) বনী ইসরাঈলদের জন্যও হালাল ছিল। তবে এমন কিছু বস্তু ছিল যেগুলোকে তাওরাত নাযিল হবার পূর্বে বনী ইসরাঈল নিজেই নিজের জন্য হারাম করে নিয়েছিল। তাদেরকে বলে দাও, যদি তোমরা (নিজেদের আপত্তির ব্যাপারে) সত্যবাদী হয়ে থাকো, তাহলে তাওরাত নিয়ে এসো এবং তার কোন বাক্য পেশ করো।
فَمَنِ افۡتَرٰى عَلَى اللّٰهِ الۡكَذِبَ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِكَ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ
৯৪.) এরপরও যারা নিজেদের মিথ্যা মনগড়া কথা আল্লাহর প্রতি আরোপ করতে থাকবে তারাই আসলে জালেম।
قُلۡ صَدَقَ اللّٰهُ فَاتَّبِعُوۡا مِلَّةَ اِبۡرٰهِيۡمَ حَنِيۡفًاؕ وَّمَا كَانَ مِنَ الۡمُشۡرِكِيۡنَ
৯৫.) বলে দাও, আল্লাহ যা কিছু বলেছেন, সত্য বলেছেন। কাজেই তোমাদের একাগ্রচিত্তে ও একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের পদ্ধতির অনুসরণ করা উচিত। আর ইব্রাহীম শিরককারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
اِنَّ اَوَّلَ بَيۡتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِىۡ بِبَكَّةَ مُبٰرَكًا وَّهُدًى لِّلۡعٰلَمِيۡنَۚ
৯৬.) নিঃসন্দেহে মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ইবাদাত গৃহটি নির্মিত হয় সেটি মক্কায় অবস্থিত। তাকে কল্যাণ ও বরকত দান করা হয়েছিল এবং সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য হিদায়াতের কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছিল।
اِنَّ اَوَّلَ بَيۡتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِىۡ بِبَكَّةَ مُبٰرَكًا وَّهُدًى لِّلۡعٰلَمِيۡنَۚ فِيۡهِ اٰيٰتٌۢ بَيِّنٰتٌ مَّقَامُ اِبۡرٰهِيۡمَ ۚ وَمَنۡ دَخَلَهٗ كَانَ اٰمِنًاؕ وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الۡبَيۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَيۡهِ سَبِيۡلاًؕ وَمَنۡ كَفَرَ فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِىٌّ عَنِ الۡعٰلَمِيۡنَ
৯৭.) তার মধ্যে রয়েছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ এবং ইব্রাহীমের ইবাদাতের স্থান। আর তার অবস্থা হচ্ছে এই যে, যে তার মধ্যে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। মানুষের মধ্য থেকে যারা সেখানে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন এই গৃহের হজ্জ্ব সম্পন্ন করে, এটি তাদের ওপর আল্লাহর অধিকার। আর যে ব্যক্তি এ নির্দেশ মেনে চলতে অস্বীকার করে তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন।
قُلۡ يٰۤاَهۡلَ الۡكِتٰبِ لِمَ تَكۡفُرُوۡنَ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ وَاللّٰهُ شَهِيۡدٌ عَلٰى مَا تَعۡمَلُوۡنَ
৯৮.) বলো, হে আহলি কিতাব! তোমরা কেন আল্লাহর কথা মানতে অস্বীকার করছো? তোমরা যেসব কাজ কারবার করছো, আল্লাহ তা সবই দেখছেন।
قُلۡ يٰۤاَهۡلَ الۡكِتٰبِ لِمَ تَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ مَنۡ اٰمَنَ تَبۡغُوۡنَهَا عِوَجًا وَّاَنۡتُمۡ شُهَدَآءُؕ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ
৯৯.) বলো, হে আহলি কিতাব! তোমরা এ কেমন কর্মনীতি অবলম্বন করেছো, যে ব্যক্তি আল্লাহর কথা মানে তাকে তোমরা আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখো এবং সে যেন বাঁকা পথে চলে এই কামনা করে থাকো? অথচ তোমরা নিজেরাই তার (সত্য পথাশ্রয়ী হবার) সাক্ষী। তোমরা যা কিছু করছো সে সম্পর্কে আল্লাহ গাফিল নন।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تُطِيۡعُوۡا فَرِيۡقًا مِّنَ الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡا الۡكِتٰبَ يَرُدُّوۡكُمۡ بَعۡدَ اِيۡمَانِكُمۡ كٰفِرِيۡنَ
১০০.) হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা এই আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে একটি দলের কথা মানো, তাহলে তারা তোমাদের ঈমান থেকে কুফরীর দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
وَكَيۡفَ تَكۡفُرُوۡنَ وَاَنۡتُمۡ تُتۡلٰى عَلَيۡكُمۡ اٰيٰتُ اللّٰهِ وَفِيۡكُمۡ رَسُوۡلُهٗؕ وَمَنۡ يَّعۡتَصِمۡ بِاللّٰهِ فَقَدۡ هُدِىَ اِلٰى صِراطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ